নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের চেতনা ধারণ করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে শেখ হাসিনা সরকার বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি আরও বলেন, জাতীয় কবি হিসেবে গেজেটের মাধ্যমে স্বীকৃতির চেয়ে বাস্তবে কর্মের মাধ্যমে কাজী নজরুল ইসলামকে ধারণ করাই গুরুত্বপূর্ণ।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে নজরুলের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। নজরুলের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল থেকে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ।
দেশের জাতীয় ও সরকারি বিভিন্ন আয়োজনে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তবে নজরুলকে জাতীয় কবি ঘোষণা করা সংক্রান্ত সরকারি কোনো গেজেট বা দলিল নেই। লোকমুখে প্রচারিত তথ্যের ভিত্তিতে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি, কাগজে-কলমে প্রাতিষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে নন বিধায় বহুদিন ধরে নজরুলকে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন কবি নজরুলের পরিবারের সদস্য ও বিশিষ্টজনেরা।
এ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় কবি হিসেবে নজরুল গ্রহণযোগ্য ও সমাদৃত। এটা সবার মুখের কথা নয়, এটা আমাদের বিশ্বাসে, আমাদের প্রতিটি কর্মেই আমরা প্রমাণ করছি। আমরা প্রত্যেকে কর্মে জাতীয় কবি হিসেবে তার চেতনাকে ধারণ করছি। তার স্বপ্নকে ধারণ করছি এটাই বড় কথা। জাতীয় কবি হিসেবে তাকে সম্মান করছি শ্রদ্ধা করছি এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
এর আগে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটের দিকে কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মাদ সামাদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল প্রমুখ।
সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, নজরুল অসাম্প্রদায়িকতা, সাম্য, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির কথা বলেছিলেন। এই মূল্যবোধগুলোর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল বলেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার কবিতা-সাহিত্যকর্ম অসাধারণ প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল। কবিকে আমরা স্মরণ করি সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতির সময়ে। কবির প্রাসঙ্গিকতা সবসময় সমকালীন। তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের এই আয়োজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় কাজের একটি।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নজরুল ইনস্টিটিউটে নজরুলকে নিয়ে গবেষণা হচ্ছে জানিয়ে জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা ও হানাহানি থেকে মুক্তির জন্য অনুবাদকর্মের মাধ্যমে নজরুলের সাহিত্য বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে হবে।
জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকীতে তার সমাধিতে ইতোমধ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, হল সংসদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, নজরুল সংগীতশিল্পী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দলে দলে কবিকে শ্রদ্ধা জানাতে সমাধিতে আসছেন বিভিন্ন স্তরের মানুষ।